নওগাঁ

নওগাঁ

আয়তন                           : ৩,৪৩৫ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা                         : ২৩,৭৭,৩১৪ জন।
উপজেলা                         : আত্রাই, বদলগাছি, ধামইরহাট, মান্দা, মহাদেবপুর, নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, পোরশা, রানীনগর, সাপাহার।
প্রধান নদী                        : আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, চিরি।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান         : জগদ্দল বিহার, হলুদ বিহার, অগ্রপুরী বিহার।
ঢাকা থেকে নওগাঁ              : ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে নওগাঁ যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ৩৮০ টাকা।

 

দুবলহাটি রাজবাড়ি

নওগাঁ শহর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে দুবলহাটি রাজবাড়ি। বয়স ২০০ বছরের বেশি। রাজা হরনাথ রায় চৌধুরী ও তাঁর ছেলে রাজা কিংকরীনাথ রায় চৌধুরী শেষবারের মতো এর সংস্কার করেন। পাঁচ একর এলাকাজুড়ে বিশাল প্রাসাদ। প্রাসাদের বাইরে ছিল দিঘি, মন্দির, স্কুল, দাতব্য চিকিৎসালয় ও ১৬ চাকার রথ। প্রাসাদের সামনে রোমান স্থাপত্যশৈলীর বড় বড় থামের ভগ্নাংশ আজও বর্তমান। ১৮৬৪ সালে রাজপরিবারের উদ্যোগে একটি স্কুল স্থাপন করা হয়। শহর থেকে ব্যাটারিচালিত পাওয়ার হুইলার বা সিএনজি অটোটেম্পোয় দুবলহাটি রাজবাড়ি যেতে ভাড়া লাগে ১০ টাকা। রিকশায়ও যাওয়া যায়। যাওয়ার পথে পড়ে দীঘলি বিল।

 

কুসুম্বা মসজিদ

মসজিদটি মান্দা উপজেলায়। বড় একটা দিঘির পশ্চিম পাড়ে ধূসর পাথরের এ মসজিদ। দিঘিটির দৈর্ঘ্য ১২৫০ ফুট, প্রস্থ ৯০০ ফুট। কথিত আছে, এর পানিতে পারদ থাকায় কোনো আগাছা জন্মে না। প্রধান প্রবেশপথের শিলালিপি থেকে জানা যায়, ৯৬৬ হিজরি বা ১৫৫৮ সালে শের শাহের বংশধর আফগান সুলতান প্রথম গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের শাসনামলে (১৫৫৪-৬০) এটি নির্মিত হয়। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট এবং প্রস্থ ৪২ ফুট। দুই সারিতে ছয়টি গোলাকার গম্বুজ আছে। আছে কালো পাথরের নকশাকাটা সুদৃশ্য তিনটি মেহরাব। দুটি ছোট, মাঝখানেরটি বড়। নওগাঁর বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে কুসুম্বা মসজিদের দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার। বাসভাড়া ৩০ টাকা। সময় লাগে দেড় ঘণ্টা।

 

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার

পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল (৭৮১-৮৮১) এ বিহার নির্মাণ করেন। খননকালে প্রাপ্ত একটি মাটির সিল থেকে জানা যায়, এটি সোমপুর বিহার। ২৭ একর জমির ওপর এ বিহার। বিহারের ভিত্তি বেদিতে ৬৩টি হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি আছে। এ ছাড়া মন্দিরের দেয়ালে প্রায় দুই হাজার পোড়া মাটির ফলক আছে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য ১৭৭টি কক্ষ ছিল বিহারে। ৮০০ ভিক্ষুর বাসোপযোগী ছিল এ বিহার।
বিহারের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে প্রাচীরের বাইরে একটি বাঁধানো ঘাট আছে। একে সন্ধ্যাবতীর ঘাট বলা হয়। নওগাঁ সদর থেকে বদলগাছি উপজেলার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। বদলগাছি থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এ বিহার বা সংঘারাম। সদর থেকে বাসে যাওয়া যায়। সময় লাগে দেড় ঘণ্টা, ভাড়া ৪০ টাকা।

 

দিব্যক জয়স্তম্ভ

পত্নীতলা উপজেলার দিবর দিঘির মাঝখানে এ স্তম্ভ। দিঘিটি ৪০-৫০ বিঘা বা আধা বর্গ মাইলের ওপর। স্তম্ভটি আটকোণের, গ্রানাইট পাথরে তৈরি। উচ্চতা ৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি। বলা হয়ে থাকে, রাজা দিব্যকের (১০৮২-১১২৪) রাজত্বকালে পাল যুবরাজ রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের চেষ্টা করে দিব্যকের কাছে পরাজিত হন। দিব্যক বিজয়ের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে দিঘির মাঝে স্তম্ভটি নির্মাণ করেন। নওগাঁ সদর থেকে পত্নীতলা ৩৯ কিলোমিটার। পত্নীতলা থেকে দিবর দিঘি ১৩ কিলোমিটার। নওগাঁ-বালুডাঙ্গা টার্মিনাল বাসে যাওয়া যায়। ভাড়া ৬০ টাকা।

 

সূত্র: দৈনিক কালের কন্ঠ, ২০/১১/২০১১ ইং